২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৬:৫৭:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দেশের প্রধান দুই শত্রু বিএনপি আর ডেঙ্গু: ওবায়দুল কাদের মিয়ানমারের নাগরিকের সহযোগিতায় মানব পাচার পাকুন্দিয়া প্রেসক্লাবের ঈদ পুনর্মিলনী দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানালেন নবাব আলী হাসিব খান বানভাসি মানুষের পাশে মুগদা থানা ইমাম উলামা পরিষদের পক্ষ থেকে সেক্রেটারি মুফতি শফিকুল ইসলাম মাজহারীর নগদ অর্থ বিতরণ আদালত কর্তৃক উজ্জ্বল মিয়াজী হত্যা মামলার ৪ আসামির জামিন আবারও না মঞ্জুর ৩ জেলায় উজ্জ্বল মিয়াজী হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ নৌ পুলিশ ও ডাকাতদলের মধ্যে গোলাগুলির আহত ৪, আটক ১ ব্যবসায়ী উজ্জ্বল মিয়াজী হত্যাকান্ডে জড়িতরা প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাবলা ডাকাত ও কবিরখালাশীকে ধরিয়ে দিতে পারলে ২ লাখ টাকা পুরস্কার


হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা
মোসফিকা আক্তার নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৪-২০২২
হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা


নওগাঁ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা- ধুলা। বর্তমানে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো মধ্যে বেশিরভাগ ভাগই আজ বিলুপ্তির পথে। তবে গ্রামীণ জনপদে এখন ও কিছু কিছু খেলা – ধুলা চোখে পড়লে ও উৎসাহ- উদ্দীপনা ও সাহায্য – সহযোগিতার অভাবে তাও বন্ধ হতে চলেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামঞ্চলে এক সময় প্রায় শতাধিক গ্রামীণ খেলা- ধূলার প্রচলন ছিল। তার মধ্যে ছেলেরা খেলত হা-ডু-ডু,ডাংগুলি, কাবাডি, গোল্লাছুট,খেটে খেলা,দৌড় -ঝাঁপ,গাদন,চিকে কপালটোকা কানামাছি ভোঁ ভোঁ,মালাম খেলা,কুস্তি ডুব সাঁতার,নৌকাবাইচ,লাঠিখেলা, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই, হৈল বৈল, বস্তাদৌড়,লুকোচুরি অনেক খেলা।আর মেয়েরা খেলত দাঁড়িয়াবাঁধা,গোল্লাছুট, এক্কাদোক্কা, পাঁচগুটি,চোরাপুলিশ, বৌচি,কিতর্কিত, গাদন, কড়ি খেলা,বালিশ বদল, লুকোচুরি পুতুল খেলা,রান্নাবাটিসহ অনেক খেলা।এসমস্ত খেলাগুলোর অধিকাংশই এখন বিলুপ্তির পথে। তার মধ্যে এখন ও হা-ডু-ডু,কাবাডি, লাঠিখেলাও হাতেগোনা কয়েকটি খেলার প্রচলন আছে। এখন ও গ্রামাঞ্চলে পহেলা বৈশাখ মহররম ও গ্রামীণ মেলার সময় এসব খেলা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়।এসব ঐতিহ্যবাহী খেলা- ধুলার পরিবর্তে অনেক দিন আগেই এদেশে প্রচলন হয়। ফুটবল খেলার। বর্তমানে উপযুক্ত পুষ্ঠাপোষকতা ও খেলার মাঠের স্বল্পতার কারণে বিপন্ন অবস্হায়। ক্রিকেট খেলা আমাদের দেশীয় খেলা না হলে ও অন্যান্য দেশের মত বর্তমানে আমাদের দেশে বর্তমানে প্রচলিত খেলাগুলো মধ্যে অন্যতম। এক সময় রাখাল ছেলেরা মাঠে গরু চরাতে গিয়ে ও স্কুলপড়তে যায়ে ছেলে মেয়েরা নানা ধরনের গ্রামীণ খেলা নিয়ে থাকতো। বর্তমানে শহরাঞ্চলে তো বটেই গ্রামঞ্চলে ও খোলা জায়গা বা খেলার মৃত্যু ঘটেছে অনেক আগেই। ফলে বর্তমানে ভিডিও গেম,টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি গ্রামীণ খেলা- ধূলার সে স্থান দখল করে নিয়েছে।হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা ছেলেমেয়েদের একটু সময় মেতে ওঠে এসব জিনিস নিয়ে। পড়াশোনা যেমন ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশ ঘটাতে খেলাধুলার কোন বিকল্পনেই।আগেকার দিনে গ্রামঞ্চলে হা-ডু-ডু, কাবাডি ও লাঠিখেলার জন্য রীতিমত প্রতিযোগিতা চলত। বিভিন্ন গ্রামে এসব খেলার জমজমাট আয়োজন হতো। এ সমস্ত খেলা দেখার জন্য অনেক দূর দুরান্ত থেকে খেলা শুরুর অনেক আগে থেকেই মানুষ দলে দলে এসে উপস্থিত হতো খেলার মাঠে। অনেক খেলতো টাকার বিনিময়ে ও বিভিন্ন দলের হয়ে খেলতে।তাতে দেরে ভালো খেলে যেমন টাকাসহ নানারকম পুরস্কার মিলতো সেইসাথে খেলোয়াড় হিসাবে এলাকার ছাড়িয়ে পড়তো তার খ্যাতি।সমাজের সর্বস্তে রের মানুষ এসমস্ত খেলোয়াড়দরকে অনেক সম্মান করতো। আগেকার দিনে প্রতিবছর সব স্কুল, কলেজ,মাদরাসাগুলোতে নানা ধরনের খেলাধূলার আয়োজন করা হতো।বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশ ঘটছে না।বর্তমানে আকাশ সংস্কৃতি আগ্রাসনের ফলে ছেলেমেয়েরা ক্রমশ খেলা বিমুখ হয়ে পড়েছে। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য এসব গ্রামীণ খেলাধুলা তো করেই না এমনকি এসব খেলাধূলার নাম ও জানেনা। অথচ এক সময় এসমস্ত খেলাধুলাকে বাদ দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্যের পূর্ণতাকে কল্পনাও করা যেত না।বর্তমানে এসব ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার প্রচলন না থাকায় গ্রামীণ জনপদ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে হাজার বছরের বাঙালি ঐতিহ্য।এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়ত অচিরেই গ্রামীণ খেলা – ধুলা আমাদের সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাবে। পরিণত হবে রূপক থার গল্পে। তবে এখনও সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যেগ নিয়ে হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলোর অনেকটাই টিকিয়ে রাখা স্রভব।এ সমস্ত গ্রামীণ খেলা ধুলার সাথে রয়েছে আমাদের পূর্বপুরুষদের নাড়ীর সম্পর্ক। তাই তাদের স্মৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমাদের উচিত এসমস্ত গ্রামীণ খেলা ধুলার আয়োজন করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এর পরিচিতি ও তার সুফল লাভের জন্য আকৃষ্ট করা।

শেয়ার করুন