২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৫২:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দেশের প্রধান দুই শত্রু বিএনপি আর ডেঙ্গু: ওবায়দুল কাদের মিয়ানমারের নাগরিকের সহযোগিতায় মানব পাচার পাকুন্দিয়া প্রেসক্লাবের ঈদ পুনর্মিলনী দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানালেন নবাব আলী হাসিব খান বানভাসি মানুষের পাশে মুগদা থানা ইমাম উলামা পরিষদের পক্ষ থেকে সেক্রেটারি মুফতি শফিকুল ইসলাম মাজহারীর নগদ অর্থ বিতরণ আদালত কর্তৃক উজ্জ্বল মিয়াজী হত্যা মামলার ৪ আসামির জামিন আবারও না মঞ্জুর ৩ জেলায় উজ্জ্বল মিয়াজী হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ নৌ পুলিশ ও ডাকাতদলের মধ্যে গোলাগুলির আহত ৪, আটক ১ ব্যবসায়ী উজ্জ্বল মিয়াজী হত্যাকান্ডে জড়িতরা প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাবলা ডাকাত ও কবিরখালাশীকে ধরিয়ে দিতে পারলে ২ লাখ টাকা পুরস্কার


হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে শতবর্ষী বৃদ্ধের করুণ জীবন কাহিনী।
ভোরের ধ্বনি অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৯-২০২১
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে শতবর্ষী বৃদ্ধের করুণ জীবন কাহিনী। জাকির হোসেন সুমন স্টাফ রিপোর্টার


হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার বয়স ১২৫ বছরের বৃদ্ধ এই বয়সের ভারে এখন চলাফেরা করতে খুব কষ্ট হয় তার। ৬ ফুট লম্বা, গায়ে জোব্বা,মাথায় ৫ কল্লি টুপি ও হাতে একটি লাঠি যে মানুষটির নিত্যসঙ্গী, তিনি ক্বারী আব্দুল আজিজ। তার বয়স ১২৫। পৈত্রিক বাড়ি নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার ভোগাপাড়া গ্রামে। পিতার নাম মৃত জবেদ আলী। বানিয়াচংয়ে ছোটবেলায় লেখাপড়া করার উদ্দেশে এসেছিলেন। পরে ক্বারীয়ানা সম্পন্ন করে বানিয়াচং উপজেলার গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন মসজিদ-মক্তবে শিশুদের আরবি শিক্ষা দিয়েছেন। তার ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা অগণিত। আবালবৃদ্ধবণিতা সবাই তাকে লম্বা মেছাব বলে সম্বোধন করেন। তিনি জমির হাজী জামে মসজিদে ১০ বছর ইমামতি করেছেন। এ মসজিদ প্রতিষ্ঠায় এবং উন্নয়নে তার অবদান উল্লেখযোগ্য। এরই সুবাদে বানিয়াচং উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। এই ভালোবাসার টানে অদ্যাবধি বানিয়াচংয়েই রয়ে গেছেন তিনি। তিনি উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়নের অন্তর্গত দক্ষিণ যাত্রাপাশার মোকামহাটি গ্রামের বাস করছেন। তার দুই মেয়ে। স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে অনেক আগেই মারা গেছেন। মা হারানো মেয়ে ২টিকে বিয়ে দিয়েছেন উপজেলা সদরেই। জ্যেষ্ঠ মেয়ে রিজিয়া আক্তার ও কনিষ্ট মেয়ে মাহমুদা আক্তার। কনিষ্ট মেয়ে মাহমুদার স্বামী মারা গেছেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর মেয়ে চলে আসেন পিত্রালয়ে। তার কোনো সন্তান নেই। বড় মেয়ে রিজিয়া আক্তারও খুবই অসহায়। ওই মেয়ের ছোট্ট তিন ছেলে ও তিন মেয়েকে দেখভাল করতে হয় তাকেই। কারণ স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে সংসার করছেন। একদিকে মেয়েদের দেখাশোনা করা, অপরদিকে নিজের সংসার চালানো নিয়ে খুবই কঠিন অবস্থার সম্মুখীন ১২৫ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ। সংসারে আয়-রোজগার করার মতো কেউ নেই। তিনি জীবনভর আল্লাহর উপর ভরসা করেই সাংসার জীবন কাটিয়েছেন! কারও কাছে কোনোদিন সাহায্যের জন্য হাত পাতেননি! অথচ একটি সংসারে কতই না খরচ! কী করে সাংসারিক জীবনে নিত্যদিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব? জীবনে চলাফেরা করতে পারিবারিক, সামাজিক ও বিবিধ খরচ তো প্রতিনিয়তই করতে হয়। এসব তিনি কিভাবে করছেন? যে সকল সহৃদয়বান ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে সাহায্য প্রদান করেন, তাদের উপরেই নির্ভরশীল তিনি। যখন যা পান তা নিয়েই অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন এই বৃদ্ধ। কিন্তু সবসময় তো আর কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় না। অভুক্ত, অর্ধাহার তার জন্য নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। তিনি সবসময় মসজিদে জামাতের সহিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন। প্রতি রমজান মাসে ১৫ খতম আল্লাহর পবিত্র বাণী কোরআন শরিফ পাঠ করতেন। এছাড়া অন্যান্য মাসে কমপক্ষে ৫ খতম কোরআন শরিফ পাঠ করেন। এখনও তা চলমান রয়েছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই বৃদ্ধের দৃষ্টিশক্তি এতই প্রখর যে চশমা ছাড়া এখনো প্রতিদিন পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করতে পারেন! তবে বার্ধক্যের কারণে এখন আর কোনো মসজিদ-মক্তবে পড়াতে পারেন না। ফলে তার পেশা বলতে কিছুই নেই। চলাফেরা করতেও অক্ষম। নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, খাবার-দাবার সবকিছুই এখন করতে হয় বিছানায়। তিনি শারীরিকভাবে উচ্চ রক্তচাপ ও দুর্বলতায় ভুগছেন। এছাড়া শরীরে আর কোনো সমস্যা নেই। দারিদ্র্যতার অতল গহবরে বসবাসকারী অসহায় এই বৃদ্ধের কপালে সরকারি বয়স্ক ভাতা জুটলেও আর কোনো সহায়তা মিলেনি। কিন্তু বৃদ্ধকালে শুধু কি বয়স্ক ভাতা যথেষ্ট? এদিকে, বিধবা মেয়ে ১০ টাকা কেজি দরে চাল পেলেও বিধবা ভাতার জন্য চেষ্টা করেও কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি।এভাবেই এ বৃদ্ধ অসহায় মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন। তথ্য সূত্র সিলেট ভয়েস।

শেয়ার করুন